Skip to main content

 

 

 

 

 

আমার ঠাকুমা ও আমি। হঠাৎ পুরোনো কিছু ছবি ঘাঁটতে গিয়ে আবিস্কৃত হল। সঙ্গে সঙ্গেই মনে কিছু দায়বোধ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা হেতু এই পোস্ট। 
 
       ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে বিহার করতে করতে মানব মনে সংশয় আসা স্বাভাবিক, সমস্ত মানবজাতিই কি এমন সুন্দর! 
 
       তা তো নয়, বিধাতার সৃষ্টিতে সব আছে, তাই সুরূপের বিপরীতের অবস্থানও আছে। তার প্রমাণের দায় আমিই নিলাম, কারণ নানা বিষয়ে অপ্রিয় সত্য কথা লিখবার অপযশ ইতিমধ্যে আমার কিঞ্চিৎ হয়েছে যখন তখন বিধাতার সৃষ্টির এইদিকটাও সবার সামনে রাখা আমারই কর্তব্য। 
 
       কথা হল, এ হেন রূপ নিয়ে তো ধরাধামে অবতীর্ণ হলুম। যত দিন যায় রূপ তত খোলতাই হয়। আজ লোকে বলে, তুমি বিবাহবন্ধনে নিজেকে আবদ্ধ করোনি কেন? তার উত্তর দার্শনিক মতে এতদিন দেওয়ার চেষ্টা করে এসেছি, আজ দর্শনিক ভাবে দিলাম। নারীকে 'অবলা' বলে শাস্ত্রকারেরা বহু গঞ্জনা সহ্য করেছেন, এর সাথে যদি 'অদ্রষ্টা' বলেন তবে তাদের নরকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা আবশ্যক হবে। 
 
       তবু কি হৃদয়ে সেদিন গোলাপের বাগান হয়নি? হয়েছে। "কে মোরে ফিরাবে অনাদরে, কে মোরে ডাকিবে কাছে"... এ সংশয়ে মন আকুলও হয়েছে। কিন্তু কোনো বীর রমণী এগিয়ে আসার দুঃসাহস দেখাননি। তারা ভেবেছেন যুদ্ধে প্রাণ যায়, সে মুহূর্তের যন্ত্রণা, কিন্তু অহোরাত্র এ রূপের আগুনে দগ্ধ হওয়ার চাইতে সে অনেক ভালো। অগত্যা গোলাপ বাগান ক্রমে জবার বাগান হয়ে উঠল, প্রেমিক বসন্তের বাতাসের প্রতীক্ষায় আর কালযাপন না করে জগন্মাতার চরণকেই জীবনের সার করল। ক্রমে ব্রহ্মবায়ুতে দোলা খেতে খেতে চুলে পাক ধরল, চিত্তে চরা পড়ল। 
 
       এমন সময় এলো ফেসবুক। তা ক’টা কবিতা লিখেটিখে, ফটোশপে ঝাঁ চকচকে ছবি ছাপিয়ে, কিছু প্রেমের মেসেজ যে পাইনি তা একেবারেই নয়। কিন্তু কি ভাগ্যের পরিহাস, চিত্তে গোলাপের বীজ আর ধরে না। দুব্বো গজিয়ে যায়। 
 
       এই হল আমার প্রাচীন উপাখ্যান। সঙ্গে যে রমণীটিকে দেখা যাচ্ছে, ইনি আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা। আমার ঠাকুমা। তার চোখে তার নাতির রূপ স্বয়ং কার্তিক ঠাকুরকেও নাকি হার মানায়। ভেবেছিলাম ওনার আড়ালেই সমস্ত জীবনটা কেটে যাবে, ওনার মুগ্ধ চোখের প্রশ্রয়ে। কিন্তু তা কি আর হয়! হল না। উনি স্বর্গবাসী হলেন, আমি স্বর্গচ্যুত।