Skip to main content
 
অবশেষে রশিতে টান পড়িল। বুদ্ধি বিহ্বল হইয়া বলিয়া উঠিল, অহো ভাগ্য, আমা হতে ঊর্ধ্বে কে?
       দেশপতি বলিয়া উঠিলেন, ঐতিহ্য।
       বার্তাবহ পত্রিকায় রোগ সংক্রমণের সংখ্যা ঊর্ধ্বগামী। সেই সংখ্যা জনতার দিকে চাহিয়া কহিল, ভয় নাই?
       জনতা কহিল, রোগ উহাদের হয়? আমাদিগের নহে।
       ঊর্ধ্বগামী সংখ্যা আরো দুটি শূন্য বাড়াইয়া কহিল, উহারা কাহারা, আর তোমরাই বা কাহারা?...
       উত্তর আসিল না। টুইটারের পাখি মাতিয়া উঠিল রাজগৃহ হইতে। উল্লাসে। জনতার চীৎকারে, উল্লাসে, ঢাকঢোল নিনাদে হইহই পড়িয়া গেল।
       উপনিষদের পাতা হইতে ব্রহ্ম দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, আমি যে বলিয়াছিলাম, আমি অন্তরে, গুহায়িতম। শান্তং শিবম অদ্বৈতম - আপনাকে শান্ত শুভবুদ্ধি সমাহিত করিয়া জগতকে আপনার সহিত অভিন্নবোধে মুক্ত হইবার কথা বলিয়াছিলাম? তাহা কি কেহ বুঝিল না?
       দীর্ঘশ্বাস উড়িয়া গেল। চিকিৎসককূল নাকানিচুবানি খাইয়া রোগী সামলাইতে ব্যস্ত। একবার নাকি ঠিক হইয়াছিল সকল চিকিৎসক মিলিয়া রথের রশি টানিতে পথে নামিবেন। কিন্তু ভক্তগণ হইহই করিয়া কহিল, এ আমোদ আমাদিগের জন্য, আপনারা কিট পরিয়া সেবা করিয়া প্রাণপাত করুন। আপনারা হইলেন গিয়া ভগবানের দূত। এক চিকিৎসক সাহস করিয়া বলিল, "সেই আমরাই তো কহিতেছি, এ আমোদের সময় ইহা নহে, সম্মুখে প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা। আমাদিগের তাহা সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি নাই।" অমনি রক্তচক্ষু হইয়া উঠিল চারিধার হইতে। চিকিৎসক নীরব রহিলেন।
       চলিল প্রাচীন, বর্তমানের সমস্ত বাধানিষেধ সাবধানতা পদদলিয়া। বিজ্ঞান, শুভবুদ্ধি, বাস্তবজ্ঞান সকল পিষ্ট হইল প্রবল প্রাচীনত্বের চাকায়।
       ভক্ত কহিল, ঈশ্বর তুষ্ট হইলেন, ঐতিহ্য রক্ষা হইল। উপনিষদের পাতা হইতে ব্রহ্ম একটি প্রবল জৃম্ভণ সহযোগে নিদ্রা যাইলেন। লোকাচার কহিল, আপনি নিদ্রা যান প্রভু, আমি আছি। উহারা আমাকেই মানে, আপনাকে বিস্মৃত হইয়াছে বহুকাল হইল।