অলোকেশবাবুর ভীষণ হিসাবি সহানুভুতি
মালতীর ছেলের জন্য টাকা দিয়েছিলেন
ছেলেটার টাইফয়েড হয়েছিল
মালতীর স্বামীর চিকিৎসায় টাকা দেননি
বরটা মারা গেল।
অলোকেশবাবু দার্শনিক।
বললেন, পরমায়ু কি আর টাকার অপেক্ষা রাখে মালতী?
অলোকেশবাবুর রঙীন মন। মালতীর কাপড়ে চোপড়ে রঙ।
অলোকেশবাবুর সংযত সহানুভূতি।
অলোকেশবাবুর ভীষণ একাকীত্ব তবু।
মালতীর মত অনেকের শাড়িতেই রঙ। তবু।
অলোকেশবাবুর বিষাদ এখন। পাড়ার একটা গোটা রাস্তা বানাতে টাকা ঢেলেছেন-
নামটাই তো থাকে!
তবু অলোকেশবাবু ভীষণ অসুখী।
সুখের অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত মানুষটা
যেন সারা জীবন পেলেন সুখের আভাসই শুধু,
আঠার মত প্রকৃত সুখ কই?
অলোকেশবাবু দীক্ষিত। ঈশ্বরের নামগানে গভীর অনুরাগ।
অলোকেশবাবু নাস্তিকও। সব কিছুকেই যুক্তি দিয়ে দেখেন।
কখনো কখনো বিশ্বাসও যুক্তি - অলোকেশবাবু বলেন।
তবু সুস্থির নন অলোকেশবাবু। মৃত্যু যেন উই এর মত বাড়ির আনাচে-কানাচে।
অলোকেশবাবুর ঘুম হয় না।
অলোকেশবাবু রাত্তিরে একা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদেন।
বালিশ জানে আর বিকলু জানে, অলোকেশবাবুর কুকুর।
হঠাৎ খবর এলো অলোকেশবাবু নিরুদ্দেশ।
সত্যিই খবর। মানুষটা নেই।
মালতীর বুকে চোরকাঁটার মত বিঁধল কিছু একটা
মানুষটা নেই! গেল কোথায়? মানুষটা কি ততটাই খারাপ ছিল?
কুকুরটাও নেই। বাড়িতে তালা।
আজ দশ বছর হল।
অলোকেশবাবু কি সত্যি শান্তি পেলো?