তোমার জন্য
কেউ জানে না
চৌমাথা পেরিয়ে ভাবলে, এবার বুঝি একটা হিল্লে হল। যে রাস্তাটায় চলেছো সেটা যাবে সিধা। হয় না। তোমার সোজা রাস্তাটা পাঁচমাথার মোড়ে এনে দাঁড় করায় তোমায়।
তুমি মনে মনে বলো, বিশ্বাসঘাতক।
অভিমান হয় তোমার।
আবার একটা সোজা রাস্তা। তুমি হয়ত আবার নিশ্চিন্ত। সামনে এসে দাঁড়ালো দশমাথার মোড়।
তুমি দীর্ঘশ্বাস ফেললে।
অভিমান কুঁড়ি হয়ে ফুল হতে হতে ঝরে গেল।
রক্তবাহ
রাস্তাটা ক্রমশ ছোটো হতে শুরু করেছে। সামনের দিকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না প্রায়। তবু হাতড়াতে হাতড়াতে মানুষটা এগোচ্ছে। আচমকাই রাস্তাটার মাঝখান থেকে দুটো টুকরো হয়ে গিয়ে লোকটা তলিয়ে গেল।
আলোকবর্ষ
হাত পেতেছিলাম
কিছুটা সময় চাইব বলে
পেলাম না
শুধু আঙুলগুলো পিছিয়ে গেলো
কয়েক আলোকবর্ষ
আস্তিক অসম্পূর্ণতা
ভূত বলে কিছু আছে নাকি? আছে তো, খুব আছে। আমি নিজের চোখেই কতবার দেখেছি। প্রত্যেকটা অসময়ের মৃত্যুর একটা অসম্পূর্ণ গল্প রেখে যায়। যায় না? সেই অসম্পূর্ণ গল্পটাই তো ভূত। তাকে দেখা যায়, ছোঁয়া যায়, কোলে তুলে গল্প করা যায়। হয় না?
জুতো
কলিংবেল বাজল। রাত এগারোটা। ছেলেটা দরজা খুলে বাইরে কাউকে দেখতে পেলো না। এদিক ওদিক তাকিয়ে দরজাটা বন্ধ করতে গিয়ে খেয়াল করল, সামনের সিঁড়িতে দু'পাটি জুতো রাখা। ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে কিছু মনে করার চেষ্টা করল। পারল না। দরজাটা বন্ধ করে টিভির সামনে এসে বসল। টিভিটা চলছিলই।
ওপার
মেয়েটা বলত, তাকে যে বিয়ে করবে সে কত টাকা যেন মাইনে না পেলে বিয়েই করবে না, বেশ বড় অঙ্কের টাকা থাকবে, চারচাকা থাকবে, বড় বাড়ি থাকবে ইত্যাদি। খবরের কাগজে, ম্যাগাজিনে ক্রিকেটার, অভিনেতাদের ছবি বেরোলে কেটে কেটে বইয়ের ফাঁকে রাখত। তারাই তার জন্য আদর্শ হবু বর।
বাস্তব
বাস্তবে তোমার আমার সাথে কি প্রয়োজন বলো?
তবু কিছুটা সময় বাস্তব না হয় থাকলই আড়ালে
তুমি তোমার সময় হলে ফিরে যেয়ো
আমি ফিরিয়ে নেবো বাস্তবকে আবার আমার মত করে
তুমি ভেবো না
মৃত্যুর ভিডিও
সোশ্যাল মিডিয়া মৃত্যুকে কত সাবলীল করে, ঘরে এনে বালিশ বিছানার উপর রাখছে। কত কত টাটকা মৃত্যুর ভিডিও। কত হত্যার নিপুণ লাইভ রেকর্ডিং। কত আত্মহত্যার স্বচ্ছ, স্পষ্ট, অরিজিনাল ভারসান। কোনো স্টান্ট নয় দেখুন, ভালো করে তাকান। লাইভ ধর্ষণ দেখবেন?
কি করা উচিৎ
"তোমার কি করা উচিৎ
জানতে চাও হৃদয়ের কাছে,
মস্তিষ্ক উপায় বার করে নেবে"
- গুলজার