সৌরভ ভট্টাচার্য
20 July 2014
জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে,
বর্ষার দুপুর।
সামনের নারকেল গাছে একটা ঘুঘুপাখি এসে বসল।
পুরো ভিজে আছে।
আমি যে কাছেই আছি, সে খেয়ালও করল না।
গা ঝাড়ল,
পা গুটিয়ে বসল নিশ্চিন্ত হয়ে একটা বড় পাতার উপর,
পাতাটা হাওয়ায় দুলছে।
আমি মুখ নামিয়ে বই পড়তে লাগলাম।
অনেকক্ষণ কাটল।
আবার গাছের দিকে তাকালাম,
একই রকম ভাবে বসে পাখিটা।
ইতিমধ্যে পাশে দুটো শালিক আসল,
ভিজে স্নান।
তারা গা ঝাড়ল, ডানা ঝাপটাল,
কথা বলল নিজেদের মধ্যে,
কি চঞ্চলতা!
একটুক্ষণ বসল পাশাপাশি,
তারপর উড়ে গেল ব্যস্ততায়।
ঘুঘু বসে নির্বিকার। কোনো কৌতুহল নেই।
নেই দৃষ্টি আকর্ষণের কৃত্রিম ভঙ্গী।
আমি কিছু কাজ সেরে ফিরে এলাম ঘন্টাখানেক পর,
সে এখনো একই ভাবে বসে।
তাকিয়ে রইলাম আরো কিছুক্ষণ তার দিকে।
সে জানেও না এত বড় বিশ্বে দু'জোড়া চোখ তাকে দেখছে
আর আরাম পাচ্ছে তার সহজ বিলাসে।
তার মাথার উপর বড় নারকেল পাতার ছায়া,
তার উপরে ঝরছে বর্ষা, সে নিশ্চিন্তে বসে।
এবার সে উঠল। দাঁড়িয়ে দেখল চারিদিক।
ভিজে ডানা মেলে ধীরে মিলিয়ে গেল মেঘলা আকাশে-
বিনা ব্যস্ততায়, বিনা ভূমিকায়।
উদাস হলাম।
মনে হল, সত্যিই জীবন নিজে কত সহজ!
এত জটিল তাকে করলাম কি করে?
(ছবিঃ সুমন দাস)