Skip to main content
akash


নিজেকে লাটাইয়ের সুতোর মত ছেড়ে দিতে দিতে মানুষটা থমকে দাঁড়ালো। নিজের যেদিকটা অসীমকে ছুঁয়ে আছে, তাকে আর স্পষ্ট নীচ থেকে দেখা যায় না। আর যেদিকটা মাটিতে আটকে আছে সেখানে সুতো নেই পর্যাপ্ত। আর দুইপাক ঘুরলেই সুতো শেষ। শূন্য লাটাই পড়ে থাকবে মাটিতে। এখন কি করবে সে? 

    হঠাৎ ঝড় উঠল। আকাশ ঘিরে এলো দস্যুর মত কালো মেঘ। এক ধাক্কায় আকাশ থেকে ছিঁড়ে পড়ল তার অসীম ছোঁয়া আমি মাটিতে। আকাশে ওড়া সুতোতে লাগল কাদা। তার অসীম ছোঁয়া আমিকে স্নান করিয়ে গেল আকাশ ধোয়া বৃষ্টির জল। এবার? 

    মেঘ কেটে গেল। রাত গভীর। লাটাই, সুতো আর সে মাটিতে শুয়ে। আকাশ জুড়ে তারা তারা আর তারা। ঝোপের মধ্যে জোনাকির ভিড়। সে কি হারিয়ে গেল? সবটুকু ইচ্ছা কি তার শেষ হয়ে গেল? সেকি ব্যর্থ হল অবশেষে? 

    ভোর হল। সূর্যের আলো এসে পড়ল মাঠে। মাঠে জমা জলের মধ্যে চিকচিক করে উঠল আলো। হঠাৎ কি একটা এসে পড়ল তার গায়ে। 

    ফুল একটা। বৃষ্টিতে ভেজা পাপড়ি। সে বলল, তুমিও ছিঁড়ে পড়লে?

    ফুল বলল, আমার কাজ হল শেষ। এবার মাটিতে মেশার পালা। 

    লোকটার ক্ষুব্ধ আমি বলল, কিন্তু আমার যে অসীমলোকে যাওয়ার কথা ছিল! 

    ফুল হাসল। বলল, অসীম মানে বুঝি আকাশ শুধু। মাটির মধ্যে যে অসীমতা তাকে জানো না বুঝি! 

    অভিমানী আমি বলল, তার সীমা আছে। 

    ফুল বলল, সে তো দেখার। অনুভবের তো না? 

    বিস্মিত আমি বলল, অনুভবের অসীমতা কি?

    ফুল বলল, মাটি লাগা পা, মানে ভালোবাসা। অসীমকে যদি সীমার মধ্যে না পেলে তবে সে নিজেকে শুধু ভোলাবার লোভ। সীমার মধ্যে যেদিন পাবে, সেদিন তাকে বলবে, প্রেম। সেদিন হবে সার্থক। 


(ছবিঃ Debasish Bose)