Skip to main content

ইভি রামস্বামী পেরিয়ার, ১৯২৮ সালে ভারতীয় নারীদের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে লিখছেন,

"Turkey, Afghanistan and China are standing examples of women achieving their freedom"..

আফগানিস্তান! সত্যিই ইতিহাসের গতি বড়ই দুর্গম! যেদিন মেয়েদের অবস্থানকে দৃষ্টান্ত বলছেন পেরিয়ার, সেদিন থেকে আজকের আফগানিস্তান কি ভয়াবহ জায়গায়। ইতিহাসে আসলেই ক্রমোন্নতি বলে কোনো তত্ত্ব হয় তো হয় না। এক-পা এগিয়ে দু’পা পিছিয়ে... এইভাবেই চলে আসে।

নাকি ধর্ম আর সমাজ যেখানে গভীর আত্মীয়তা রাখে সেখানেই এই ডামাডোল এত বেশি হয়। সমাজের ধারা যুক্তিগত সত্যকে মানবে, না কয়েক হাজার বছর আগে লেখা কোনো বইকে ধ্রুব, নির্ভুল, পবিত্র, শাশ্বত সত্য বলে মানবে - এর উপর সবটা নির্ভর করে।

রাজার ধর্ম সমাজের প্রধান ধর্ম হয়। ইতিহাস তাই বলে। যদি না কোনো বিপ্লব ইত্যাদির উত্থান হয়। ধর্ম যখন সমাজের বিধান দেয় তখনই সে একটা থ্রেট হয়ে দাঁড়ায়। সে যে কোনো ধর্মই হোক। কি উচিৎ আর কি অনুচিত - সে মানুষের প্রাথমিক মনুষ্য চরিত্র বলতে যা বোঝায়, সে-ই তার নির্ধারক হয়, কোনো চাপিয়ে দেওয়া কোড অব কন্ডাক্ট হলে তো বিপদ।

অ্যারিস্টটল যখন এথিক্স লিখছেন তখন স্বর্গের দিকে ইঙ্গিত করছেন না, করছেন মানুষের স্বাভাবিক চরিত্রের দিকেই। মানুষ নিজের স্বভাবের মধ্যে ঢুকে সোনার মানুষ খুঁজে পাক, গান বাঁধুক, ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু প্রাচীন যুগের কোনো অপরীক্ষিত, বিশুদ্ধ বিশ্বাস নির্ভর প্রথাকে চাপিয়ে দিলে কার সুবিধা হচ্ছে সেটা ভালো করে দেখতে হবে। নইলে আজকের খবরের কাগজ খুললেও যখন এ দেশের এ প্রান্তে সে প্রান্তে দলিত মেয়েদের উপর নারকীয় অত্যাচারের কথা আসছে, তখন এ প্রথা টিকিয়ে রেখে কাদের সুবিধা হচ্ছে সেটাকে খুঁজে বার করা আশু দায়িত্বর মধ্যে পড়ে। রক্ত যেমন ধমনী শিরার মধ্যে দিয়ে আপনিই ছোটে না, হৃৎপিণ্ড পাম্প করে বলেই সে ছোটে, তেমনই এ হাজার বৈষম্যের ধারা বয়ে চলেছে কোন হৃৎপিণ্ডের পাম্পে সেটাকে তো খুঁজে বার করতেই হবে। যদি বলি ধর্মের জন্যেই সব হচ্ছে, সেটা একটা কথা হল বটে, কিন্তু তার কোনো সঠিক অর্থ বোঝা গেল না। ধর্ম বলে কোনো ব্যক্তি তো নেই। মানুষই ধর্ম। মানুষ চালায় বলেই সে চলে। এখন দেখতে হবে মানুষের কোন স্বার্থবুদ্ধি একে চালায়। কেন চালায়? কারা চালায়? সমস্যার মূল তো সেখানেই।