আলেখ্য রামায়ণ দেখে আজকাল। কার্টুনে। তার ভীষণ প্রিয় চরিত্রের মধ্যে পড়ে কুন্নোকন্নো ওরফে কুম্ভকর্ণ। এবং প্রিয় দৃশ্য হল রাম আর কুম্ভকর্ণের যুদ্ধ।
সে খাটে উঠেই, আমার বুকে দুই হাত রেখে আমাকে শুইয়ে দিতে দিতে বলল, তুমি কুন্নোকন্নো হও....
আর তুই কে?
রাম
কুম্ভকর্ণের সঙ্গে চেহারায় কিম্বা ঘুমে কোথাও মিল না থাকা সত্ত্বেও চরিত্রের চাহিদা মেটাতে শুয়ে পড়তে হল। রাম অদৃশ্য অস্ত্র সহযোগে আমার ঠ্যাঙ, পেট ইত্যাদি কাটতে ব্যস্ত। কিন্তু যাকে নিয়ে এই এত কাণ্ড সে কই? মানে সীতাদেবী কই?
সীতা, মানে আরাধ্যা ততক্ষণে অশোকবনে ফাইভ জি মোবাইলে গেম খেলতে ব্যস্ত। এদিকে যে তার অনতিদূরেই রাম আর কুম্ভকর্ণে বেজায় একটা লড়াই হচ্ছে তার কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই। মায় মাঝে মাঝে কুম্ভকর্ণ আর রামের মধ্যে দোস্তি হয়ে যাচ্ছে সে নিয়েও কোনো হেলদোল নেই সীতার। সে গেমে ঢুকে। ডাকলে খুব অনিচ্ছার সঙ্গে উঁ...অ্যাঁ বড়জোর সাড়া দিচ্ছে।
যা হোক যুদ্ধ থামল অবশেষে। নকুলদানা, কিসমিস ইত্যাদি কিছু দুষ্প্রাপ্য বস্তু দিয়ে মিষ্টিমুখ হল। যুদ্ধে বার দশেক প্রাণত্যাগ করে রীতিমতো ক্লান্ত তখন। সীতাদেবী মুখে কিছু দিলেন না। বাড়িতে মহার্ঘ্য পদ কিছু আছে বলে। এমনকি যুদ্ধের ফলাফল নিয়েও মাথা ঘামালেন না, কেন কুন্নোকন্নের কোলে শুয়ে রাম নকুলদানা খাচ্ছে। বুঝলাম ফাইভ জি মোবাইল থাকলে সীতাদেবীর আপাতত অশোকবাটিকায় থাকতে কোনো আপত্তি নেই। আর আপত্তি থাকবেও বা কেন? স্কুল, পড়াশোনার হ্যাপা তো অনেক! যদিও সেখানে মনিটর সে এখন। থুড়ি মনিট্রেস। সেও তো এক প্রকার রাজত্ব চালানো। কম হ্যাপা নাকি! তার চাইতে এমন স্বেচ্ছায় অপহরিত করলে নিজেকে অসুবিধা কি? আর যেখানে রাবণ, ওরফে কুন্নোকন্নের মনও পড়াশোনা, স্কুল-কলেজে অত নেই, যত খেলাধুলায়।
আর সঙ্গে যাকে দেখা যাচ্ছে, অনিকেত, তিনি ছিলেন দুর্নীতিপরায়ণ দর্শক। মাঝে মাঝে সীতার সঙ্গে গেম খেলছিলেন, মাঝে মাঝেই আবার রামকে উস্কাচ্ছিলেন।