Skip to main content

        বন্যার ভয়াবহতার সদ্য সাক্ষী আমরা। নানা স্তরের মানুষের সাহায্যের সাক্ষীও আমাদের চিত্ত। আবার নীরবতা বা উদাসীনতার সাক্ষীও। 
        ১৯৩১ সাল, বাংলা বন্যায় ভাসছে। রবীন্দ্রনাথ চিঠিতে লিখছেন, ২৩ অগস্ট,
"আমাকে হয় তো আর দিন দশেকের মধ্যে কলকাতায় যেতে হবে। বন্যাপীড়িত বাংলার সাহায্যের জন্যে কিছু চেষ্টা না করে স্থির থাকা অসম্ভব...এর আগে যে বন্যা হয়েছিল তাতে ঋণ করে প্রজাদের সাহায্য করেছি - দ্বিতীয়বার ঋণ বাড়াতে সাহস হয় না। তাই স্থির করেছি কলকাতায় বর্ষামঙ্গল দেখিয়ে বর্ষাজনিত অমঙ্গল কথঞ্চিৎ দূর করতে চেষ্টা করব।"
এর কয়েকটা চিঠির পরেই লিখছেন শান্তিনিকেতনে অর্থাভাবের জন্য শিক্ষকদের যথোপযুক্ত মাইনে দিতে অপারগতার কথা -"নিতান্তই অশক্তিবশত তাঁকে ( জনৈক সঙ্গীতাচার্য) যথোচিত বৃত্তি দিতে পারিনি"। এই নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টিও যে হয়নি, তাও নয়। তবু তাঁকে নিজের অশক্ত সত্তরোর্দ্ধ শরীরে ব্যক্তিগত সমস্যা উপেক্ষা করেও বন্যার সাহায্যের দায় নিতেই হবে। কলকাতায় অনুষ্ঠান করে টাকা তোলার কথা চিন্তা করতে হচ্ছে তাঁকে, কারণ - "শরীর পীড়িত কিন্তু দেহের দোহাই মেনে কর্ত্তব্য মুলতবি রাখার অবকাশ আমার আর নেই"।
        মহাপ্রাণ শুধু সুক্ষ্ম চিন্তায় হয় না, "নারায়ণ সেবা" তকমাও লাগে না, কি লাগে তা স্পষ্ট করে জানি না, এটুকু জানি, তা এমন কিছু যা অত্যন্ত সরল, কিন্তু সুলভ নয় - মহাপ্রাণের দরদ।