Skip to main content
 
      সন্ন্যাসী বললেন, গান শোনো শুনলাম খুব, আমায় কিছু ভজনের ক্যাসেট এনে দিও তো। শুনে ফেরত দেব।
      পরেরবার নিয়ে গেলাম। যশরাজ, ভীমসেন নিয়ে এম এস শুভলক্ষ্মী ফেরত দিয়ে বললেন, মহিলাদের ভজন শুনি না।
      বুঝলাম। এম এস শুভলক্ষ্মী যতই উচ্চমানের গায়িকা হোন। প্রথমত উনি মহিলা। সন্ন্যাসীর সংযত জীবনের প্রতি থ্রেট।
      গঙ্গার ধারে বসে আছি। খানিকবাদে আরাত্রিক হবে। মঠের কম্পাউণ্ডে প্রচুর মহিলা। নানা বয়েসী মহিলা। এখানে ওখানে নানা বয়েসী সন্ন্যাসী। পায়চারি করছেন। কেউ কথা বলছেন। কেউ নানা আচারবিচার করতে ব্যস্ত মন্দিরগুলোতে।
      মহিলাদের অন্যরকম ভাবে দেখতে ইচ্ছা করল। থ্রেট হিসাবে। ব্রহ্মচর্যের থ্রেট। আমার আত্মপরিচয়, অহংকারের থ্রেট। যাদের শুধুমাত্র কণ্ঠস্বরে আমার বীর্য উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে, হোক সে কণ্ঠস্বরে তখন ঈশ্বরের নামগান। ঈশ্বরের নামও তখন দুর্বল। সন্ন্যাসী মেয়েদের চিত্রপট পর্যন্ত দেখবে না - তাই তো, পড়েছি তো।
      সামনে গঙ্গা। কোন যুগ থেকে বয়ে চলেছে। কত লক্ষকোটি মানুষের গল্প জানে। কত প্রাচীন লুপ্ত ইতিহাসের কাহিনী জানে। মানুষ জানে না। মানুষ শুধু নিজেকে জানে। গর্ব জানে। ভুলকে সত্য হিসাবে একমাত্র মানুষই জানে।
      আজ এসব থেকে অনেক দূরে আমি। জোমাটোর গল্প শুনছি। পেপারে বিয়ের প্রস্তাবে বর্ণাশ্রমের তাণ্ডব দেখছি। শিক্ষক, চিকিৎসকের স্কুল, হাস্পাতাল উত্তর ব্যবসা দেখছি। হলুদ জারনালিজম দেখছি। বালিঝড়ের রাজনীতি দেখছি। নিজের মধ্যে জন্মাতীত কালের অন্ধকারময় অভ্যাসের বীজ দেখছি।
      এত সহজে যাবে না বুঝতে পারছি। গঙ্গা বইছ কেন? এ তো আজকের প্রশ্ন নয়, ক্ষোভ নয়। তবু বলি গঙ্গা বয়ে যাও, একদিন পারলে নতুন জল এনো। অপেক্ষাটা অবাস্তব হলেও বলছি, অপেক্ষাতেই আছি।