Skip to main content

আবারও একজন হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করা হল। বৌদ্ধ একজনকেও। নৃশংস হত্যা। মৃত্যু, হত্যা - এর কোনো জাত, সম্প্রদায় হয় না। রক্ত গড়ালে সেটা মানুষেরই রক্ত গড়ায়। মৃত্যুর তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে যে মারা যায় সে আদতে রক্তমাংসে গড়া একটা মানুষই তো। স্নায়ুগুলো সুতীক্ষ্ণ অত্যাচারের নির্মম যন্ত্রণা নিয়ে যায়। এ সবই অবশ্য আমাদের কল্পনা। টিভিতে, পেপারে দেখা ছবিতে যা অনুভূত হয়, তার সাথে নিজেদের অ্যাক্সিডেন্ট, কাটাছেঁড়ার যন্ত্রণার অনুভূতিগুলোর স্মৃতি হাতড়িয়ে অনুভব করার চেষ্টা করা। বেশিরভাগ সময় চ্যানেল পাল্টে সিরিয়াল, খেলা অথবা সিনেমায় আবার মনোনিবেশ করা। আরে নিজেদের বাঁচতে হবে তো!


তবে হিন্দু বা বৌদ্ধ মৃত্যুতে অনেকটা বাঁচোয়া। কারণ রাজনৈতিক নেতারা বেশি কথা বলা পছন্দ করেন না এই নিয়ে। অবশ্যই গেরুয়া রঙের অস্পৃশ্য, নন-সেকুলার দাগের ভয়ে। অবশ্যই তা ন্যায্য। স্বনামখ্যাত দেশ বিদেশে যাওয়া কবিরা তাদের ফেসবুক পেজ ভরিয়ে কবিতার কলমকে গর্জে উঠতে দেন না, আরে মৃত্যু, হত্যা তো আকছার ঘটনা, তা নিয়ে তোলপাড় করার কি আছে? আরে এ কি অমুক দেশের অমুক ঘটনার মত ঘটনা যে তার ফলাফল এতই সুদূরপ্রসারী হবে যে আমায় কলম ধরতে হবে? নোম চোমস্কী মশায় তথা আরো বিজ্ঞ সেকুলার মানুষদের পড়ে দেখো তাঁরা এমন কিছু এসব নিয়ে বলা কওয়া করা পছন্দ করেন না।


আরো দেখো, হিন্দুদের না আছে বিত্তের জোর, না বন্দুকের। এমন একটা আকাটমুখ্যু দর্শনে বিশ্বাস করে তাতে না হয় গা গরম, না হয় মাথা। একটা দুর্বলের দর্শন। তারা বলে, 'যত মত তত পথ', সব ধর্মের একতা – ইত্যাদির মত ভুলভাল কথা। আচ্ছা তাও কি কখনো হয়! এই সেই যে পাদরী পোড়ানো, তারপর গোমাংস নিয়ে এই কেমন সব কেচ্ছা ঘটিয়েছে এই জাতটা মনে নেই? তবে এদের মেরে রাস্তায় ফেলে রাখবে আর আমরা তাই নিয়ে গণমাধ্যম কাঁপাবো, ফেসবুক কাঁপাবো? কেন রে? তখন কেমন গর্জেছিলাম মনে নেই? দেখেছিলি তো আমাদের কলমের জোর, গলার জোর, উদারতার জোর। আরে ভাই, ঈশ্বর না মানি, আই এস তো মানি। কালী দূগ্‌গা না মানি, চৈতন্য, রামকৃষ্ণ না মানি, সাদা চামড়ার মাহাত্ম্য তো মানি। আরে দেখোনি পাড়ায় একটা গরীব লোক মারা গেলে যতটা না শোক হয়, লোকজনের জমায়েত হয়, বড়লোক মারা গেলে কেমন হয়? উঁহু, জানে না যেন ন্যাকা! সব জানে, সব বোঝে তবু...


তবে বুঝলে কি না ভায়া সেকুলারিজমের একটা নন-সেকুলার দিক থাকে। ক্ষমতা, টাকা, সন্ত্রাস তার মালিকানায় থাকে। সেটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবে তত মঙ্গল। আর এই পোস্ট কেউ শেয়ার তো করবেনই না, লাইক দেওয়া বা কমেন্টস করার মত দুঃসাহসও দেখাবেন না। আসুন তর্ক করি। অহিন্দু অবৌদ্ধ কৃত নাশকতা আর হিন্দুকৃত নাশকতার মধ্যে তুল্যমূল্য বিচার করি।
শোক জানাবো? গর্জে উঠব? কবিতা লিখব? ওমা কেন? আ গেল জ্বালা, আমাদের কোনো কাজ নেই? যা ভাগ! শালা পদ্মপাতার পচা গন্ধের দল! মানুষ আবার দল ছাড়া তাও যেন হয়! ন্যাকা! ...