আবার ধুপধাপ আওয়াজ। এবার রান্নাঘরের উপরের তলা থেকে। যতই হোক, রাত্তিরবেলা সেই আওয়াজটাও বিরক্তিকর। কিন্তু যতবারই উপরের তলায় দরজায় ধাক্কা দেন, কেউ দরজা খোলে না। দিনের বেলায় তালা দেওয়া থাকে। কি ঝক্কি! একাই থাকেন খিলানবাবু ফ্ল্যাটের তিনতলায়। পাঁচতলা ফ্ল্যাট। তার উপরের ঘরেই এই সমস্যা। ফ্ল্যাট কমিটি গুরুত্ব দেয় না। লোকে বলে ভূত আছে। উনি ভূতে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না যে রাত বারোটার পর ওই ফ্ল্যাটে তালা থাকে না। কারোর কোনো গা নেই হাজার বার বললেও। আর শুনবেই বা কেন, উনি যে সমাজবাদী পার্টি করেন।
শুয়েছেন। ঘরের আলো নেভালেন। খানিক পরেই ধুপধাপ আওয়াজ। আজ কমিটির সাথে প্রায় হাতাহাতি হওয়ার জোগাড় হয়েছিল মিটিং এ, তাই কাউকে ডাকাও যাবে না। উনি ছাদের দিকে তাকিয়েই শুয়ে। ভূত সত্যিই?
হঠাৎ মনে হল খাটের তলা থেকে খাটটা কেউ নাড়াচ্ছে। দেখতে দেখতে ছাদটা ফাঁক হয়ে গেল, সোজাসুজি ওপরের তলার বেডরুমটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মাঝে যেন একটা কাঁচের দেওয়াল। আবছা অন্ধকারে কে যেন একটা মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে। রক্ত গড়াচ্ছে মনে হল মেঝেতে। কারা ওকে তুলে একটা দেওয়াল আলমারিতে ঢুকিয়ে সামনে আলমারি দাঁড় করিয়ে চলে গেল।
পুরো ঘটনাটা খিলানবাবু রুদ্ধশ্বাসে দেখলেন। থানায় গেলেন। পুলিশ এলো। মৃতদেহ উদ্ধার করল।
পরের দিন থেকে খিলানবাবু নিখোঁজ। দোতলার মৃত্যুঞ্জয়বাবু কমিটিকে বললেন, উপরের তলায় মাঝরাতে শব্দ আসছে, ধুপধাপ। কেউ বলল, মাঝরাতে ফ্ল্যাটের জলের ট্যাঙ্কের উপর খিলানবাবুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে। সাদা পায়জামা আর পাঞ্জাবি পরে। আর যারা এই দৃশ্যটা দেখেছেন বা শুনেছেন তারাও নাকি....
যাই আর গল্পটা লিখতে ভালো লাগছে না, শুই গিয়ে… শুভরাত্রি।