উনি সুখী ছিলেন না। উনি একা ছিলেন না।
একা ছিলেন না বলেই সুখী ছিলেন না।
উনি বারান্দা, শোয়ারঘর, রান্নাঘর আর শৌচের ঘরকে বলতেন,
সংসার।
উনি নানাবিধ সম্পর্ককে বলতেন,
কর্তব্য।
খারাপ ব্যবহার করতে দেখিনি কোনোদিন
পেতে দেখেছি
উনি বলতেন,
ভবিতব্য।
ভবিতব্য যিনি লেখেন
তিনি,
ওঁর হাতে জ্বালা দীপ-ধূপ-ভোগ নিতে আসতেন। নিঃশব্দে।
ওঁর এই ছিল জপের মন্ত্র -
নিঃশব্দতা।
উনি যখন যাচ্ছেন। পায়ে আলতা। কপালে লেপা সিঁদুর। চারদিকে উড়ছে খই। নাম উঠছে, হরিবোল।
শুনতে পেলাম
ওঁর গায়ে জড়ানো নামাবলীর চাদর হাওয়ায় উড়তে উড়তে বলছে
ধীরে। আস্তে, আস্তে।
ঘরে জমে থাকা
ওঁর গন্ধ
মিলালো মৌসুমি বাতাসে, বসন্ত বাতাসে, গ্রীষ্মের হুতাশে
বছর ঘুরতে, না ঘুরতে।
সেদিন ওঁর ঘরে ঢুকে বসলাম।
কিচ্ছু চিহ্ন নেই। এমনকি ছবিও না। রঙ হয়েছে নতুন করে দেওয়ালে।
ঘরে কত লোক। কত কথা।
কারুর উচ্চারিত কোনো স্বরবর্ণ, কি ব্যঞ্জনবর্ণে উনি নেই।
কিন্তু আছেন। স্পষ্ট দেখলাম আছেন।
ঘরের আনাচে-কানাচেতে এখনও স্পষ্ট জমে
নিঃশব্দতা
চিরুনির ফাঁকে আটকানো মাথার চুলের মত।
শব্দেরই আয়ু আছে
নিঃশব্দতা?
ন জায়তে মৃয়তে বা কদাচিন…
উনি আছেন।
উনি সুখী ছিলেন না। একা ছিলেন না।
একা ছিলেন না বলেই সুখী ছিলেন না।