সৌরভ ভট্টাচার্য
31 January 2019
একটা সরু করিডোর। আলো নেভানো। অপারেশান থিয়েটারে আসন্ন মৃত্যু, যে মানুষটা ভালোবাসার, তার। যে সদ্য জন্ম দিয়েছে এক মৃত পুত্র সন্তানের, তার। যে মানুষটা অন্ধকার করিডোরে, সে সদ্য একটা যুদ্ধকে মাঝপথে রেখে পালিয়ে এসেছে দেশান্তরে, তার প্রেমিকাকে নিয়ে, কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই। এসেছে ভালোবাসতে। একটু শান্তিতে থাকতে। একটু নির্বিঘ্নে ভয়ংকর মৃত্যুলীলাকে সরিয়ে বাঁচতে।
মানুষটার স্মৃতির আলোয় এখন একটা গাছের ডাল। আগুন ধরানো হয়েছে। যুদ্ধের ক্যাম্প। পানীয় গরম করতে হবে। সেই শুকনো গাছের ডালের গর্ত দিয়ে বেরিয়ে আসছে পিঁপড়ের সারি। যে দিকে আগুন নেই ছুটছে সেদিকে। কিছু কিছু আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছে, মুহূর্তে পুড়ে ছাই। পিঁপড়ের সারি শুকনো কাঠের ডাল ধরে ছুটছে যেদিকে আগুন নেই, শীতল। কোনদিকে ছুটছে জানে না। তবু ছুটছে.. সামনে আগুন, কাঠের ডালটার চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে আগুন, আগুন আর আগুন। ঝাঁপ দিয়ে পুড়ে মরতে হবে। তারা ঝাঁপ দিচ্ছে।
মানুষটা প্রার্থনা করছে, হে ঈশ্বর, না না না... পুত্রকে কেড়েছ মাতৃগর্ভেই... ওকে না.. ওকে বাঁচিয়ে দাও... প্রাণ ভিক্ষা দাও..
বাইরে বৃষ্টি তখন। মানুষটার স্মরণে সেই শুকনো গাছের ডাল, যে ডালটা তখনই মাটিতে ফেলে দিলে পিঁপড়েগুলো সার দিয়ে মাটিতে, ঘাসের উপর দিয়ে হেঁটে চলে যেত হয়ত... দেয়নি তো... পানীয় গরম করেছিল.. পুড়ন্ত গাছের ডালে... পিঁপড়েদের মৃতদেহের তাপেই.....
(হেমিংওয়ে..আ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস.. আমি তো কটা আঘাত প্রতিধ্বনি করলাম মাত্র..)