লোকটা অনেকদিন এই অফিসে আছে
ওই বাঁদিক থেকে তিনটে চেয়ার ছেড়ে নীল রঙের চেয়ারটায় বসে
চেয়ারটা ঘোরানো যায় ৩৬০ ডিগ্রী। লোকটা ঘোরায় না সাধারণতঃ খুব দরকার না হলে।
চেয়ারটা ঘোরাতে গেলে এখন একটা বিশ্রী ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজ হয়
সেদিন একবার ঘোরাতে গিয়েছিল, অফিসের ছেলেটাকে একটা অ্যান্টাসিড আনতে দেবে বলে
ছেলেটা পিছনের সারির পাঁচ নম্বর নীল চেয়ারের লোকটার কি একটা কাজ করছিল।
লোকটার টেবিলে একটা ডেলের কম্প্যুউটার, ডানদিকে ফাইল, বাঁদিকে একটা বাচ্চা মেয়ের ছবি।
লোকটা আগে অফিসের ডানদিকে বিরাট কাঁচের দেওয়ালের সামনে দাঁড়াত
দুপুরবেলা খাওয়ার পর, সামনের ঝিলে পাখিদের দেখত, তখন চোয়ালগুলো এত শক্ত ছিল না ওর।
আবার দাঁড়াত সন্ধ্যেবেলা সূর্যাস্তের সময়, ডুবন্ত সূর্যের আলোয় পাখিদের ঘরে ফেরা দেখত
তখন ওর চোখের নীচে এতটা কালি ছিল না। ওর চেয়ারটাও ঘুরত মাঝে মাঝে ৩৬০ ডিগ্রী।
মেয়েটা চলে গেল যেদিন ছবিটা তার দু'দিন পর এনে রাখল
তারপর থেকে ওর ঘাড়ের পেশী আরো শক্ত হয়ে উঠল
চোখটা দীঘির জলের মত স্থির, একটা সূর্যাস্ত যেন আটকে ওর চোখে
কোনো পাখিই যেন ঘরে ফেরার পথ পাচ্ছে না, নাকি ঘরে ফিরতে চাইছে না
লোকটা বেঁচে আছে। অফিসে জানে। ব্যাঙ্কে জানে। রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড জানে।
শুধু লোকটা জানে না। আর জানে না ওর চেয়ারটা।