আজ ২৫শে ডিসেম্বর। এক মহাত্মার জন্মদিন। যিনি ত্যাগের মাধ্যমে প্রেমকে শুদ্ধ করে নিতে বলেছিলেন। নিজের জীবন ক্রুশে দিয়ে সে শিক্ষার নজির হয়েছিলেন নিজেই।
আমার প্রায়শই মনে হয়, সমস্ত মহাত্মাদের জন্মদিনের পরিবর্তে তাঁদের প্রয়াণ দিবসের মাহাত্ম্যই যেন বেশি। খ্রীষ্ট যেদিন জন্মেছিলেন, আজকের সেই দিনটি ছিল নিতান্ত সাধারণ অন্য দিনের মতই। তাকে আলাদা করে আবিস্কার করা যায় নি। সকল মহাত্মার জন্মলগ্নই তাই। বুদ্ধ, মহাপ্রভু, কবীর, নানক, মহম্মদ, রামকৃষ্ণ যেদিন জন্মেছিলেন সেদিন তাঁরা আর পাঁচটা শিশুর মতই জন্মেছিলেন। কিন্তু যত দিন যেতে লাগল তত তাঁদের দিব্য চরিত্রের এক একটা পাঁপড়ি বিকশিত হতে থাকল। তার চূড়ান্ত সমাপন টানল তাঁদের প্রয়াণ দিবস। মানুষ সেদিন মাথা নীচু করে দাঁড়াল, চোখের জলে শ্রদ্ধা জানাল। তাঁকে বলল ভগবান, মসীহা, অবতার, আরো কত কি!
তাই বলছিলাম। যেদিন জন্মে ছিলেন না, যেদিন ছেড়ে গেলেন সেদিন মানুষ তাঁর জীবনটাকে পিছন ফিরে দেখেছিল। আবিস্কার করেছিল তাঁকে। তাই খ্রীষ্টের শেষদিনটাই আজ বিশেষ করে মনে পড়ছে-
"আমার সারা শরীরকে নাও তোমরা খাদ্য করে
আমার রক্তে ভরো পেয়ালা।
আমি যাব, ফিরবার সময় হল বন্ধুরা।
যা কিছু ছিল আমি উজাড় করে দিয়েছি,
শেষ রক্তবিন্দু আর শেষ নিঃশ্বাসকে করে সম্বল, বলছি-
বিশ্বাস রাখো,
নিজের ভালবাসাকে শুদ্ধ করো ত্যাগে।
যেভাবে আমি তোমাদের ভালবেসেছি
ভালবাসো একে অন্যকে সেই ভাবে।
যে ভাবে পিতা আমাকে তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন
সে ভাবে নিজেকে দাও সবার মধ্যে।
তোমাদের মধ্যেই একজন করবে বিশ্বাসঘাতকতা,
তার হাত ধরেই আসবে আমার মৃত্যু।
তবে জেনো, এ অনিবার্য।
কারণ মৃত্যুকে জয় করবে যে প্রেম তার পেয়ালা
নিদারূণ বিষে ভরা।
সে বিষের উপর আমি হব জয়ী
হব মৃত্যুঞ্জয়!
তোমার বিশ্বাসকে করতে জয়।"
(ছবিঃ সুমন দাস)