Skip to main content

কাজের মানুষ

প্রাণের মানুষ আর কাজের মানুষ। কাজের মানুষ দরকারের মানুষ। সে দরকার যতই কিনা গুরুত্বপূর্ণ হোক, তার একটা মেয়াদ আছে। কিন্তু যে প্রাণের মানুষ সে যতই কিনা অকাজের হোক, গোলমেলে হোক, যন্ত্রণাদায়ক হোক না কেন, তার মেয়াদ আর ফুরোবার নয়। অনেক মায়েরা যেমন ভীষণ জ্বালাতনকারী সন্তানকে 'পেটের শত্রু' উপাধিতে ভূষিত করেন, এও তেমন।
          এই যেমন ধর্ম দিয়েই শুরু করা যাক। এই যে এত এত অবতার, গুরু, মন্দির ইত্যাদিকে অনেকে আমরা প্রাণের সঙ্গে জুড়িয়ে রাখি, নাস্তিকেরা আবার যেমন নানা রাজনৈতিক দার্শনিক, নেতাদের ফটোতে মালা দিয়ে প্রায়ই ভালোবাসা জানান, এতে দোষের কিছু আছে?
...

রত্নামাসি

রত্নামাসির যা ছিল অন্তর জুড়েই ছিল। রত্নামাসির দুটো ছোটোঘর জোড়া সংসার, স্বামী, দুটো বাচ্চা ছেলে, একটা খাট, একটা আলমারি, গ্যাসওভেন, একটা ড্রেসিংটেবিল, দুটো সাইকেল, একটা লেডিস, একটা জেন্টস - সব রত্নামাসির অন্তর জুড়েই ছিল। দুটো কি তিনটে বাড়ি কাজ করত রত্নামাসি। হাসিমুখ, বারবার পরা শাড়ি, মাটি ছুঁয়ে যাওয়া ঢালু হয়ে আসা চটি, একটা কালো ছাতা, কি একটা তেলের গন্ধ - এই তো রত্না মাসি।
          শীতেরবেলা গেছি কয়েকবার। খোঁজ নিতে - কাজে এলে না কেন?
...

পারবো

কাউকে চিনতে পারেন?

না

এটা কে? এই.. বড়.. এই ছোটো ছেলে... চিনতে পারেন?

না....

বাঁচতে ইচ্ছা হয়?
...

পরিবর্তন

    দোকানে তালা লাগিয়ে, তালাটা একবারও টেনে দেখার ইচ্ছা যখন হল না, তখন আর বাড়ি না গিয়ে বড় রাস্তার মোড়ে, উজ্জ্বল হলুদ আলোটার নীচে বসে, কুকুরগুলোকে ডাকলেন। 
          কুকুরগুলো পরিচিতের মত ঘিরে বসল যখন, উনি ব্যাগ থেকে দুটো বিস্কুটের প্যাকেট খুলে, বিস্কুটগুলো ছড়িয়ে, কারোর কারোর গায়ে হাত বুলিয়ে বললেন, খা। 
...

কন্ট্রোল কাউকে দিও না

আমার কিশোর বন্ধুরা, এ লেখা বিশেষ করে তোমাদের জন্য। আমি পর পর কয়েকটা আত্মহত্যার খবর পেয়ে একটু বিচলিত, তাই কিছু কথা একটু আলোচনা করতে চাই। দেখো, নেশা শব্দটা তোমরা শুনেছ। আমি এই নেশা নিয়েই কয়েকটা কম আলোচিত দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। 
          দেখো, তোমরা শুনেছ যে মানুষ সিগারেট, মদ, গাঁজা এরকম নানা নেশা করে। তোমরা জানো এগুলো বাইরে থেকে মানুষ কিনে বা জোগাড় করে নিজের নেশার ইচ্ছাকে তৃপ্ত করে। এখন একটু ভেবে দেখো তো, নেশা আর অভ্যাসের মধ্যে ঠিক পার্থক্যটা কি? নেশার জিনিসটা আমার উপরে তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার পেয়ে বসে। এটাই হল সব চাইতে খারাপ দিক নেশার। বাকি শরীরের উপর কি প্রতিক্রিয়া সেই নিয়ে আমার এখানে আলোচনা করার দরকার নেই। আমার কথা হল যে সেটা তোমার উপর তার কন্ট্রোলিং পাওয়ারটা পেয়ে বসে। তুমি সম্পূর্ণ তার কন্ট্রোলে চলে যাও। 
...

রাধা-গোবিন্দ

রাধা বলল, হ্যাঁ গো, এ যে পুজো সম্পূর্ণ না করেই গেল চলে!
          গোবিন্দ বলল, ওই যে দেখো, একটা পাখির শাবক পড়েছে মাটিতে। নীড় ছেড়ে। বেড়ালে খাবে যে ওকে। তাই সে দৌড়ালো পুজো ছেড়ে।
          রাধা বলল, তুমি সে পাখিকে পড়তে দিলে কেন?
....

ভুল হয় না জোনাকিদের

মা আড়চোখে দেখছে মাঝে মাঝে। বারণ করছে না। ধীরে ধীরে বুঝে যাবে। জোনাকিরা ধরা দেয় না। তামাকের উগ্র গন্ধ সহ্য করা অভ্যাস এখন। যে নাক আগে যোজন দূরের হাসনুহানার অস্তিত্বে সাড়া দিত।
          বাচ্চাটা কোলের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। তার ছেঁড়া প্যান্টের উপর বসে একটা জোনাকি এখনও দব দব করে জ্বলছে।
....

একাকীত্ব নেই তো

একটা কুকুর কিম্বা বেড়াল পুষতে পারো তো, তবে তো একা লাগে না। 
কিন্তু যে আমায় ভালোবাসতে বা আমার অনুগত হতে বাধ্য, তার ভালোবাসা বা আনুগত্য পেতে যে আমার লজ্জা বোধ করে। যে আমায় প্রত্যাখ্যান করার স্বাধীনতা পায় না, যার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমার আনুগত্য স্বীকার করা ছাড়া তেমন কোনো প্রশস্ত পথ নেই, তাকে ঘাড়ে, পিঠে বয়ে কি করব? সে বরং আমায় সত্যিই একা করবে। স্বয়ং ঈশ্বর যখন আমায় তাঁকে স্বীকার করা বা অস্বীকার করার স্বাধীনতা দিয়েছেন, তখন কাউকে কোনো কিছুতেই বাধ্য করতে আমার রুচিতে বাধে।
....

কত্তাবাবা ও ছাগল

টুপ করে ঢিলটা ডুবে গেল। ছাগলটা লাফ দিয়ে বলল, আরেব্বাস! কত্তা আপনার কি টিপ! এক টিপে ফড়িংটাকে ঘা দিলেন!
          কত্তা বলল, আগে এক টিপে বাঘ মারতাম রে। তখন তো তুই জন্মাসইনি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঘোড়া, সিংহ এই সব নিয়ে হাঁটত। ছাগল কি কেউ নিত রে!
          ছাগলটা উদাস হয়ে বলল, তাও...
....

এই মানুষে সেই মানুষ আছে

- মশায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখছেন? 
- না, হাওড়ার ব্রীজের উপর বামাখ্যাপা চড়ে বসে মা মা করছেন, তাই দেকচি... যত্তোসব… 
- আহা, চটেন কেন? চা কি ঠাণ্ডা হয়ে গেছে? 
- কেন? 
...
Subscribe to